Friday, 16 November 2012

হাওর, মানুষ ও প্রকৃতির বাঁচার লড়াই

মোস্তাফা জব্বার : হাওরে আমার পৈতৃক নিবাসকেবল হাওর বললেই হবে না, আমার দাদার বাড়িটা হাওরের ঠিক মাঝখানে_ নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরি থানায়এক সময়ে খালিয়াজুরিকে বলা হতো কালিদহ সাগরসেই সাগরের বিবরণ পাঠ করলে ভয় পেয়ে যেতে হয়কেবল সমুদ্রের গভীরতা নয় এতে বসবাসকারী বিচিত্র প্রাণী ও পানির ভয়ঙ্করতা যে কোন শিশুর জন্য আতঙ্ক তৈরি করতে পারেসেই সাগরের মাঝে আমাদের পৈতৃক ভিটেবাড়িআমার দাদাদাদি ও পিতা-মাতার কবরের পাশাপাশি, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, উত্তরাধিকারের সহায় সম্পদ, বংশগত কীর্তি-কর্মকা-, শৈশবের শিক্ষা, যৌবনের মুক্তিযুদ্ধ সবই ওখানেদিগন্তবিস্তৃত আকাশ,

Sunday, 11 November 2012

রবীন্দ্রনাথ, শৈলজারঞ্জন ও নেত্রকোণা

-------------সঞ্জয় সরকার
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালী জীবনে প্রাতঃস্মরণীয়তাঁর জন্য আমাদের বাঙালী পরিচয় আজ গর্বিত, মহিমান্বিতরবীন্দ্রনাথের জন্মদিন মানেই সমগ্র বাঙালী জাতির সীমাহীন গৌরব ও অহংকারের একটি দিনতাই সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয় এ দিনটিকিন্তু রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী পালনের একটি চমকপ্রদ তথ্য অনেকের কাছেই আজও

Sunday, 6 May 2012

আয়রে আয় মরিচ ফুল


গ্রামীণ শরীর মাটির ঘ্রাণ জলপড়ে, মাটির ঘ্রাণ মাদকতা আনে পাতায়, ফুলে প্রজাপতির নাচন শুরু; ছোট ছোট বনজ গুল্মের ওপর সাজানো বুনোফুল বাড়ছে স্বর্ণলতা ঘরের দরজা খোলা উঠোনে কঁচি শিশুদের স্বপ্ন নির্মাণের মহড়া প্রতিদিনের খেলায়, ছড়ায়, ছন্দে কলহাস্যে নেচে উঠছে বিকেলের কন্যারা এক্কা দোক্কা, বৌচি, বন্দিভাষা, গোলছুট ........ খেলার রকম সকম
মেয়েটাকে নিয়ে স্বপ্নালু বাবা মা -
স্বর্ণলতা / বাঁশের পাতা
বাঁশ / ঝনঝন করে
স্বর্ণলতার / বিয়ে হবে
জমিদারের / ঘরে
স্বর্ণলতা বড় হয় ঠিক যেন - ঝিঙেফুল শেষ চিহ্নটা বিকেলের সন্ধার সংকীর্ন সময়ের মতো কেমন শান্ত্ম ঘরানার মন -
গুল্মে পর্ণে
লতিকার কর্ণে
ঢলঢল স্বর্ণে
ঝলমল দোলে দুল
ঝিঙ্গেফুল (ঝিঙেফুল / কাজী নজরুল ইসলাম)
স্বর্ণলতা স্কুলে যায় পড়বে বিদুষী হবে ওর স্বপ্ন সুলতানা রাজিয়া, তানিয়া, প্রীতিলতা, রোকেয়াদের মতো ........... স্কুলে তার কতো পড়াওর পড়ায় ছন্দ, লিখায় ছন্দ স্বাধীন বেড়ে ওঠা মেয়েটাকে নিয়ে আমরা ভাবছি, কতো ভাবনা কিন্তু সমাজ ভাবছে - সমাজের কর্তামুখে বের হচ্ছে পদ ; ছড়ায় ছড়ায় -
মা গুনে / ঝি
গাই গুনে / ঘি
স্বর্ণলতাকে তার মায়ের মত ভাগ্যটাকে মেনে নিতে হবে-
ঝি গুনে / জামাই,
পুত গুনে / কামাই
কিন্তু মা যে পুরুষ শাসিত সমাজের শৃংখল ভাঙ্গতে চানগেঁয়ো নিয়মচারিতা, সমাজের শৃংখল, ধর্মীয় অনুশাসন খেঁকিয়ে ওঠে-
ছেইরান (মেয়ে) / হইছে
আগালী ধান, /
কাঁচায় কুচায় / বাইন্ধা আন /
                                  ২
এখনো নারীর দেহ মনকে কেবল উপাদন যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু ভাবা হয় না নিয়ন্ত্রন রেখা তার চারপাশে বিকেলের মাঠ ডাকে খেলার ছলে কত ছড়ার ব্যবহার স্বর্ণলতার চোখ বন্ধ অন্য একজন পেছন থেকে চেপে ধরেছে চোখ ডাকছে-
আয়রে আয় মরিচ ফুল
আয়না ধইরা হিতি (সিথি) তুল্‌
মরিচ ফুলের মত সুন্দর একটা মেয়ে; স্তে আস্তে এগোয় চোখ বন্ধ যে মেয়েটার তার কপালে টোকা আবার নিজের আসনে বসা বিপক্ষের রাজার উচ্চারণ-
, , , ,
মাথা হেট কর (মাথা নিচু কর)
বইল্যা (বলে) দিলে খেলতাম না
চোখ ছেড়ে দেয়া হল কিন্তু স্বর্ণলতার চোখে যে অন্ধকার ........... একসময় ফর্সা হয় চারপাশ ওর কপালে যার টোকা পড়ল, ওটা কার টোকা?

Thursday, 3 May 2012

প্রথা ও সংস্কারের জাল


আভিধানিক অর্থে দমন শব্দটি বলতে বোঝায় দন্ড দেয়া, শাস্তি দান, শাসন, সংযম, নিবারন ইত্যাদি তেমনি অবদমন মনের স্বাভাবিক প্রভৃতি বা বাসনা দমন কাজেই দমন অবদমন শব্দবন্ধটি আমাদের চেতনায় একটি অপ্রীতিকর ভাব চেতনা জাগিয়ে তোলে মানুষের তৈরি এই আভিধার রয়েছে ইতিহাস পরম্পরা সময়ের পরিবর্তনের সাথে মানুষের ভৈদ বুদ্ধি ও জীবন মান জটিল হতে শুরু করে সেই সাথে মানুষের অসহায়ত্ব ও বাড়ে মানুষ যখন প্রকৃতির রাজ্যে ছিল তখনও অসহায় অসহায় ছিল তখন অসহায়ত্ব ছির বিশাল প্রকৃতির কাছেকিন্তু মানুষে মানুষে ছিল স্বাধীনতা এবং সাম্যের সর্ম্পক মানুষ সম্মিলিত ভাবে প্রকৃতির নানা প্রতিকুলতার মোকাবেলা করেছে, সংগ্রাম করেছে তখনও লড়াই সংগ্রাম করেই খাদ্য আহরণ করতে হয়েছে মানুষকে তবে সেই আহরিত খাদ্য সমান অধিকারের ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছে
আজকে আমরা যাকে 'ভাগ্য' বলি তাও তো সেই 'ভাগ' শব্দটি থেকেই উদগত যা শ্রমের সাথে সম্পর্কিত ছিল অথচ সেই ভাগ্যের চেতনা এখন অন্যরকম হয়ে গেছে ঐ সমাজ ছিল মূলত সাম্যবাদী সমাজ খাদ্যবস্তু সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে আহরিত হতো শিকারে সকলকে অংশগ্রহণ করতে হতো অর্থা শ্রমের প্রশ্নের প্রত্যেকের অংশগ্রহণ ছিল অনিবার্য অবশ্য তখন খাদ্য আহরণের কৌশল এমন আদিম অবস্থায় ছিল যে, বহু ব্যক্তির সমন্বয় ব্যতীত গোটা শিকার কার্যক্রম সফল করা সম্ভব ছিল না আর এক ব্যক্তির পে যেখানে একজনের খাদ্য সংগ্রহই ছিল কঠিন, সেখানে উদ্বৃত্ত থাকা তো কল্পনা মাত্র কিন্তু ক্রমে হাতিয়ারের উন্নতির সাথে সাথে ব্যক্তির স্থান দখল করে নিল হাতিয়ার ফলে সৃষ্টির হল, আর এই ব্যক্তিগত সম্পত্তি সৃষ্টির সাথে সাথে মানুষ আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে বেরিয়ে এল পাদন পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে মানুষের সমাজে সৃষ্টি হল স্তরবিভক্তি এভাবে মানুষের মাঝে শ্রেণী তৈরি হল তৈরী হল শ্রেণীশোষণ আর শোষণ এবং শাসনের প্রয়োজনে সমাজ ধীরে ধীরে নানা সংস্কার এবং প্রথার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেল শুরু হল মানুষ কর্তৃক মানুষের